কবরের শাস্তি কঠিন ভয়াবহ হবে বা কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো ।
প্রত্যেক প্রাণী মরনশীল । মরনের হাত থেকে কেউ রক্ষা পেতে পারে না ।মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে ।এবং প্রত্যেক কাজের সময়ের জীবনের সম্পদের ইত্যাদির হিসাব দিতে হবে । জীবন চলার প্রতিটা মূহুর্তের হিসাব দিতে হবে । মানুষের মরণের পর বড় ভয়াবহ কঠিন ও জটিল তিনটি স্থান রয়েছে । যেখানে মানুষের কোন সহযোগী থাকবে না । সেখানে মানুষ হবে বড় অসহায় ও নিরুপায় । সেদিন ভূল ধরা পড়লে সংশোধনের কোন পথ থাকবে না । সেদিন মানুষ যে কত অসহায় হয়ে পড়বে যা ভাষায় ও কলমে প্রকাশ করা সম্ভব না । যেমন নদীর স্রোত একবার চলে গেলে তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় । তেমনি মানুষের শ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না । মৃত্যুর পরে পরকালীন ভয়াবহ স্থানের অন্যতম হচ্ছে কবর । এ সম্পর্কে অনেক ছহী হাদীছ ও কুরআনের আয়াত রয়েছে যার কিছু নমুনা পেশ করা হলো ।আল্লাহ তাআলা বলেন –হে নবী তুমি যদি অত্যাচারীদের দেখতেন যখন তারা মৃত্যুকষ্টে পতিত হয় ফেরেস্তাগন তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে বলেন –তোমরা তোমাদের আত্মা বের করে দাও । ফেরেস্তাগণ এ সময় বলেন আজ হতে তোমাদেরকে প্রতিফল স্বরুফ অপমানজনক শাস্তি দেওয়া হবে । আর অপমানজনক শাস্তির কারণ হচ্ছে তোমরা আল্লাহর প্রতি অসত্য আরোপ করতে এবং অহংকার করে তার আয়াত সমূহ এড়িয়ে চলতে (সুরা আন আম ৯৩ ) । অত্র আয়াতে অত্যাচারীদের মৃত্যুযন্ত্রণার কথা উল্লেখ হয়েছে । মৃত্যুর সময় তাদেরকে অপমান করা হয় । তা স্পষ্ট করা হয়েছে এবং মরণের পর হতেই তাদেরকে অপমানজনক শাস্তি দেওয়া হয় । আর মরনের পর যে শাস্তি দেয়া হয় তাকেই কবরের শাস্তি বলে ।আল্লাহ অন্যত্র বলেন – ফেরাউন বংশীয় একজন মুমিনকে আল্লাহ ফেরাউনদের কবল হতে রক্ষা করেন । অবশেষে এদেরকে আল্লাহর কঠোর শাস্তি ঘিরে ধরে । আর কঠোর শাস্তি তাদের সামনে সকাল সন্ধ্যায় পেশ করা হয় । (সুরা মুমিন ৪৫,৪৬)। অত্র আয়াতে যে কঠোর শাস্তি কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে কবরের শাস্তি । আল্লাহ অন্যত্র বলেন – অচিরেই আমরা তাদেরকে বার বার শাস্তি দিব ।অতঃপর তারা মহা কঠিন শাস্তি উল্লেখ করা হয়েছে । আল্লাহ অন্যত্র বলেন – আল্লাহ পার্থিব জীবনে ও আখেরাতে অবিচল রাখবেন সে সকল লোককে যারা ঈমান এনেছে প্রতিষ্ঠিত বাণীতে (সুরা ইবরাহীম ) ।এ আয়াত কবরেব আযাব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে । আনাস ইবনে মালিক (রা) বলেন ,রাসুল (ছা) বলেছেন- যখন মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখা হয় এবং তার সঙ্গীগণ সেখান হতে ফিরতে থাকে ,তখন সে তাদের পায়ের শব্দ শুনতে পায় । তাদের ফিরে যেতে না যেতেই তার নিকট দুজন ফেরেস্তা চলে আসে এবং তাকে উঠিয়ে বসান । তার পর নবী করীম (ছা) এর প্রতি ইশারা করে জিজ্ঞেস করেন তুমি দুনিয়াতে এ ব্যক্তি সম্পর্কে কি ধারনা করতে মুমিন ব্যক্তি তখন বলে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে তিনি আল্লাহর দাস এবং তার রাসূল । তখন তাকে বলা হয় এই দেখে নেও জাহান্নামে তোমার স্থান কেমন ছিল । আল্লাহ তোমার সেই স্থানকে জান্নাতের সাথে পরিবর্তন করে দিয়েছেন । তখন সে উভায় স্থান দেখেন এবং খুশি হন । কিন্তু মৃত্য ব্যক্তি মুনাফিক বা কাফের হয় তখন তাকে বলা হয় দুনিয়াতে তুমি এ ব্যক্তি সম্পর্কে কি ধারনা করতে ? তখন সে বলে আমি বলতে পারি না । মানুষ যা বলত আমিও তাই বলতাম (প্রকৃত সত্য কি ছিল তা আমার জানা নেই ) ।তকন তাকে বলা হয় তুমি তোমার বিবেক দ্বারা বোঝার চেষ্টা করো নি কেন ? আল্লাহর কিতাব পড়ে বুঝার চেষ্টা করনি কেন ? অতঃপর তাকে লোহার হাতুরি দ্বারা এমনভাবে পিটাতে শুরু করে পিটানোর চোটে সে বিকটভাবে চিৎকার করে থাকে । আর এতো জোরে চিৎকার করে যে মানুষ ও জিন ব্যতিত সব কিছুই তার চিৎকার শুনতে পারে । (বুখারি ,মুসলিম ,বাংলা মিশকাত হা/১১৯ ) অত্র হাদিছ দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে মরণের পর মানুষ প্রশ্নের মুখামুখি হবে । প্রশ্নগুলো কি হবে তা নবী করিম (ছা) স্পষ্ট বলে দিয়েছেন এবং তার উত্তর ও বলে দিয়েছেন । কবরে যথাযথ উত্তর দিতে না পারলে তার পরিণাম হবে বড় ভয়াভহ । তাকে হাতুরি দ্বারা কঠিন ভাবে পিটানো হবে । তখন সে বিকট শব্দ করে চিৎকার করতে থাকবে । মানুষ ও জিন ছাড়া সকল জীব জন্তু কীট পতঙ্গ ও জড় বস্তু সব কিছু শুনতে পাবে । ইয়া আল্লাহ তুমি আমাদেরকে কবরে সঠিক প্রশ্নের উত্তর দেয়ার তওফিক দান করো । আর জাহান্নামের হাত থেকে রক্ষা করুন । (আমিন )
COMMENTS